চুলের আগা ফাটার কারন ও আগা ফাটা রোধের উপায়
চুলের সব চাইতে
বড় সমস্যা হচ্ছে চুলে আগা ফাটা। চুলের আগা ফাটার কারণে চুল শেষের দিকে একেবারে
পাতলা ও লালচে দেখাতে থাকে, চুল ভেঙে যাওয়ার
সমস্যা ও চুল বৃদ্ধি না পাওয়ার সমস্যা দেখা দেয়। আর সে কারণেই অনেকে চুলের আগা
ফাটা সমস্যা দূর করতে আগার অংশ কেটে থাকেন। কিন্তু কতোবার কাটবেন চুলের আগা?
সমস্যার সমাধান না করে
কেটে ফেলার পরও ফেটে যেতে থাকবে চুল।
আগা ফাটা, চুল পড়ে যাওয়া আজকালকার সব মেয়েদের-ই সমস্যা। কিন্তু আমরা কি জানি যে একটু যত্নশীল হলেই
এড়ানো যাবে চুল পড়া। আপনি হয়ে উঠবেন আত্মবিশ্বাসী। আসুন আজ আমরা জেনে নেই চুলের আগা ফাটার কারন , প্রতিকার ও চুলের আগা না কেটেই
কিভাবে আগা ফাটা রোধ করবেন।
চুলের আগা ফাটার কারণঃ
১. চুলে পুষ্টির অভাব
২. রুক্ষতা
৩. ময়লা
৪. অতিরিক্ত চুল
আঁচড়ানো
৬. নিয়মিত চুলের
আগা না কাটা
যেগুলো মেনে চলবেনঃ
আমরা কারণে
অকারণে অনেক বার চুল আঁচড়াই। অনেক সময় ভেজা চুলে জোরে জোরে আঁচড়ালে ফেটে যেতে
পারে চুলের আগা। খুব যত্নের সাথে ধৈর্য নিয়ে চুল আঁচড়াতে হবে। মোটা দাঁতের চিরুনি
ব্যবহার করলে ভালো। কখনো খুব জোর দিয়ে চুল আঁচড়ানো যাবে না। জট হলে তেল বা
স্মুথেনিং ক্রিম দিয়ে জট ছাড়িয়ে নিতে হবে। প্রতিদিন গোসল না করলেও চুল ধুতে হবে
এবং তা অবশ্যই ঠাণ্ডা পানিতে। মাঝে মাঝে ডিম, লেবু ,পাকা কলা বা মিক্স প্যাক দিলে চুলে জট কম বাঁধবে। চুল অযথা ভাঙ্গা থেকেও পাবে
মুক্তি। স্কার্ফ ব্যবহার করলে চুল ময়লা থেকে রক্ষা পাবে।রুক্ষতা থেকেও মুক্তি
পাবে। কিন্তু অতি গরমে সচেতন থাকতে হবে যেন চুলের গোঁড়ায় ঘাম জমে চুল পড়ে না
যায়।
যেগুলো করবেন না ঃ
আসলে সত্যি বলতে
যত বেশি ন্যাচারাল থাকা যায় ততই ভালো। চুলে হিট দিয়ে যে কোন কিছু করা যেমন- আয়রন
করা, হেয়ার ড্রাই করা এগুলো
সত্যিকার অর্থেই চুলের আগা ফাটাতে ভূমিকা রাখে। তাই সাময়িক সৌন্দর্যের জন্যে
মূল্যবান চুল হারাবেন না। বেশি রাত জাগা যাবে না।সাপ্লাই এর পানিতে অনেক সময়
ক্লোরিন এবং আয়রন থাকে। অনেক সময় বালতির তলাও দেখা যায় না। এমন হলে গোসল করাই
বাদ। পরিষ্কার পানি দিয়েই চুল ধুতে হবে। এগুলো মেনে চললে চুল পড়া অনেকটাই রোধ করা যাবে ।
এবার চলুন জেনে নেওয়া যাক চুলের আগা ফাটা রোধ করতে ঘরোয়া ২টি প্যাক এর ব্যবহার -
ডিমের ব্যবহার:
ডিমের প্রোটিন ভেতর থেকে পুষ্টি যুগিয়ে চুলের আগা ফাটা সমস্যার স্থায়ী সমাধান করে।
নিয়মিত ব্যবহারে চুল সমস্যার কার্যকরী সমাধান পাওয়া সম্ভব।
ডিমের সাদা অংশ ১
টি
অলিভ অয়েল ২ চা
চামচ
মধু ২ চা চামচ
আমন্ড অয়েল ২ চা
চামচ
যদি চুল লম্বা ও
ঘন হয়ে থাকে তাহলে সম-অনুপাতে উপকরণগুলো বাড়িয়ে নিন।
উপকরণগুলো ভালো
করে মিশিয়ে মসৃণ মিশ্রন তৈরি করে নিন। এরপর এই হেয়ার মাস্কটি চুলের গোড়া থেকে আগা
পর্যন্ত ভালো করে লাগিয়ে নিন। ৩০-৪৫ মিনিট মাস্কটি চুলে থাকতে দিন। এরপর চুল ভালো
করে ধুয়ে ফেলুন।
চুলের আগা ফাটা
সমস্যা দূর হওয়া পর্যন্ত সপ্তাহে ২ বার ব্যবহার করুন এই পদ্ধতিটি। এরপর মাসে ২ বার
ব্যবহার করলে চুলের আগা ফাটা সমস্যা পুনরায় ফিরে আসতে পারবে না।
ক্যাস্টর অয়েলের ব্যবহার:
ক্যাস্টর অয়েল চুলের জন্য অত্যন্ত কার্যকরী একটি উপাদান। ক্যাস্টর অয়েল
চুলকে ভেতর থেকে ময়েসচারাইজ করে এবং চুলের আগা ফাটা প্রতিরোধে সহায়তা করে।
ক্যাস্টর অয়েল,
অলিভ অয়েল
সরিষার তেল
সব তেল সমপরিমাণে
একসাথে মিশিয়ে নিন ভালো করে। লক্ষ্য রাখবেন যেন তিনটি তেল আলাদা আলাদা না থেকে
একেবারে মিশে যায়।
এই তেলের
মিশ্রণটি চুলের গোঁড়ায় ম্যাসেজ করে নিন ভালো করে। তেল লাগানোর পর অন্তত ৫ মিনিট
ম্যাসেজ করে নেবেন। এরপর ১ ঘণ্টা রাখুন ও চুল শ্যাম্পু করে ধুয়ে কন্ডিশনার ব্যবহার
করে নিন।
এই মিশ্রণটি তৈরি
করে বোতলে রেখে দিতে পারেন। সাধারণ তেলের পরিবর্তে এই তেলের মিশ্রণটি ব্যবহার করুন
সপ্তাহে ২/৩ বার। ব্যস, আগা ফাটা সহ
চুলের নানা সমস্যার সমাধান পেয়ে যাবেন।
তথ্য: সায়মা
জামান, বিউটি এক্সপার্ট,
সায়মা বিউটি পার্লার।
No comments: